Tuesday, April 14, 2015

(Possibiliy for young) সম্ভাবনার নতুন হাতছানি তরুনদের জন্য

প্রতিটি ঘর 
হবে একেকটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। 
ঘরে বসেই একজন মাসে আয় 
করতে পারবেন ১৫ হাজার 
থেকে কয়েক লাখ টাকা। 
উচ্চশিক্ষা নিয়ে একটা চাকরির জন্য ঘুরতে হবে না দ্বারে দ্বারে। 
এমন উজ্জ্বল সম্ভাবনার 
হাতছানি দিয়ে ডাকছে বিশ্ব 
আউটসোর্সিং মার্কেট। এখনই 
সারা বিশ্বে রয়েছে প্রায় এক 
হাজার ৪৭০ বিলিয়ন ডলারের কাজ। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা দাঁড়ায় এক 
লাখ ২২ হাজার বিলিয়ন টাকা। এর 
মধ্যে সফটওয়্যার রপ্তানিরও 
একটি বড় বাজার রয়েছে। 
প্রতিনিয়ত এ বাজার বড় হচ্ছে। 
বাংলাদেশ এ টাকার শতকরা এক ভাগেরও কম কাজ করে। ভারত 
করে ৪৩ ভাগ। অথচ শ্রমমূল্য কম 
হওয়ায় এ বিপুল পরিমাণ টাকার বড় 
অংশই ঘরে তোলার সুযোগ 
রয়েছে বাংলাদেশের। শুধু দরকার 
কার্যকর উদ্যোগ আর সচেতনতা। কাজ করার উপযোগী দক্ষ 
জনশক্তি গড়ে তুলতে পারলে ও 
ঘরে ঘরে ইন্টারনেট সেবা সহজলভ্য 
হলেই অতি অল্প সময়ে এ 
খাতটি গার্মেন্টস খাতকেও 
ছাড়িয়ে যাবে বলেই মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।বর্তমানে দেশের 
প্রায় ৩০ হাজার পেশাদার 
তথ্যপ্রযুক্তিবিদ বিশ্বের হাজারের 
বেশি প্রতিষ্ঠানের হয়ে ঘরে বসেই 
কাজ করছেন। এ ছাড়া লক্ষাধিক তরুণ 
বিভিন্ন পর্যায়ে আউটসোর্সিংয়ে জড়িত। এ 
সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। 
সারা বিশ্বে ব্যবসা-বাণিজ্য 
বাড়ার 
সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে আউটসোর্সিংয়ের 
কাজ। বিশ্বের বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের অনেক কাজই 
এখন বাইরের প্রতিষ্ঠান 
বা ব্যক্তি দিয়ে করিয়ে নেয়। এসব 
কাজ করানোর 
ক্ষেত্রে তারা দক্ষতার 
পাশাপাশি কম টাকায় কাজ করে এমন দেশকেই বেছে নেয়। 
প্রয়োজনীয় 
দক্ষতা থাকলে ইন্টারনেটের 
মার্কেট প্লেস 
(যেখানে কোম্পানিগুলো কাজ দেয়) 
থেকে কাজগুলো বিট করে নিতে পারে যে কেউ। 
বর্তমানে ফিলিপাইন, ভারত, 
পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, 
আফ্রিকা আউটসোর্সিংয়ের 
মাধ্যমে প্রচুর আয় করছে। 
ফিলিপাইনে গত আট বছরে প্রায় সাড়ে চার লাখ কর্মসংস্থান 
হয়েছে শুধু আউটসোর্সিংয়ের 
মাধ্যমে। বিপুল সম্ভাবনা : বাংলাদেশ 
ব্যক্তিগত 
পর্যায়ে আউটসোর্সিংয়ে বিশ্ববাজারে উজ্জ্বল 
অবস্থানে থাকলেও পেমেন্টের 
জটিলতার কারণে এ খাতের 
আয়কে মূলধারার রপ্তানি আয় হিসেবে গণ্য করা হয় না। এ 
জটিলতা কাটলে এ খাতের বিপুল 
পরিমাণ বৈদেশিক আয় দৃশ্যমান 
হবে। চলতি অর্থবছরে শুধু 
সফটওয়্যার রপ্তানি খাতেই 
লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১০ কোটি ডলার। সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, 
বাংলাদেশের জন্য আউটসোর্সিংই 
হচ্ছে এ সময়ের সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য 
টেকসই কর্মক্ষেত্র। ভারত ২০০৯ 
সালে এ খাতে পাঁচ হাজার 
কোটি ডলার আয় করেছে। একই বছর চীন আয় করেছে ১১ হাজার ৮০ 
কোটি ডলার। শুধু যুক্তরাষ্ট্রই 
বছরে প্রায় ৫০ হাজার 
কোটি ডলারের 
আউটসোর্সিং করাচ্ছে। বিশ্বের 
অন্যতম একটি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেট প্লেস 
'ওডেঙ্'-এ বাংলাদেশের বর্তমান 
অবস্থান তৃতীয়। বাংলাদেশ 
প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় ৪০ 
শতাংশ কম দামে আউটসোর্সিং করায় 
বিশ্ববাজারে দ্রুত জায়গা করে নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। 
ব্যক্তিপর্যায়ে উদ্যোগ থেকে মাত্র 
কয়েক বছরে আউটসোর্সিংয়ে একজন 
সফল ব্যবসায়ী আবুল কাশেম। 
দিয়েছেন এঙ্পোনেন্ট ইনফোসিস্টেম 
প্রা. লি. নামের একটি আউটসোর্সিং ফার্ম। গাড়ি- 
বাড়ি সবই করেছেন এখানকার আয় 
থেকে। তিনি জানান, মাত্র দু-এক 
মাসের ট্রেনিং নিয়ে ছোট ছোট 
কাজ করে অনায়াসেই 
ঘরে বসে মাসে ২০ থেকে ৫০ হাজার টাকা আয় করা যায়। কাজ 
শিখে গৃহিণীরাও ঘরে বসে এ 
টাকা আয় করতে পারেন। এ জন্য 
ইন্টারনেটের মার্কেট প্লেসগুলোয় 
কী ধরনের কাজ দেওয়া হয়, 
তা করতে কী যোগ্যতা লাগবে তা দেখে নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে। ইংরেজিতেও 
কিছুটা দক্ষতা প্রয়োজন। এ 
ছাড়া দলবদ্ধভাবে বড় কাজ বিট 
করে নিয়ে মাসে লাখ লাখ টাকাও 
আয় করা যায়। তবে কেউ 
যদি এটাকে পেশা হিসেবে নিতে চান তবে তাকে নিয়মিত কাজের ধরনের 
সঙ্গে নিজেকে আপডেট রাখতে হবে। 
বাংলাদেশ ইনফরমেশন অ্যান্ড 
সফটওয়ার সার্ভিসেস (বেসিস)-এর 
সহসভাপতি এ কে এম ফাহিম মাশরুর 
বলেন, পর্যাপ্ত দক্ষ জনবল গড়ে তুলতে পারলে এ খাতের আয় 
গার্মেন্টস খাতকেও 
ছাড়িয়ে যাবে। 
পাশাপাশি বেকারত্বও দূর হবে। এ 
ক্ষেত্রে সরকারি-বেসরকারি উভয় 
পর্যায়ে উদ্যোগ নেওয়া দরকার। তিনি বলেন, 
এখনো দেশে ইন্টারনেট মূল্য বেশি। 
এ ছাড়া গ্রামে এ 
সেবাটি এখনো সেভাবে পেঁৗছেনি। 
তাই দেশের বৃহৎ জনগোষ্ঠীই বাদ 
পড়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া বিদ্যুৎব্যবস্থারও উন্নয়ন 
দরকার। ইন্টারনেটে ধীরগতি : ইন্টারনেট 
ব্যবসায়ীদের সংগঠন ইসপাবের 
সভাপতি মো. আখতারুজ্জামান মঞ্জু 
বলেন, বিটিআরসি তিন হাজার 
টাকার ব্যান্ডউইথড ১০ হাজার 
টাকায় বিক্রি করছে। এ ছাড়া ব্যান্ডউইথের 
চেয়ে নেটওয়ার্ক স্থাপন ব্যয়বহুল। 
তাই দাম কমানো যাচ্ছে না। সরকার 
নেটওয়ার্ক স্থাপন 
করে দিতে পারলে সারা দেশে স্বল্পব্যয়ে ইন্টারনেট 
সেবা দেওয়া সম্ভব হতো। দেশের দুই কোটি ৮১ লাখ ইন্টারনেট 
ব্যবহারকারীর একটি উল্লেখযোগ্য 
অংশ এখনো সেলফোনে ইন্টারনেট 
ব্যবহার করে। অবকাঠামোগত 
সমস্যার কারণে ব্যান্ডউইথের 
ব্যবহার বাড়ানো যাচ্ছে না। অন্যদিকে ব্যান্ডউইথের দামও 
বেশি। এ জন্য 
স্বাচ্ছন্দ্যে আউটসোর্সিংয়ের কাজ 
করা যাচ্ছে না। 
বিটিআরসি চেয়ারম্যান মেজর 
জেনারেল (অব.) জিয়া আহমেদ বলেন, ইন্টারনেট ব্যান্ডউইডথের দাম 
ইতোমধ্যে দুবার কমানো হয়েছে। 
আরও কমবে। এদিকে দ্বিতীয় 
সাবমেরিন ক্যাবলের সঙ্গে সম্পৃক্ত 
হতে সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ 
পর্যায়ে। নতুন সংযোগটি স্থাপন হলেই ইন্টারনেটে গতি বাড়বে। যেসব কাজ করা যায় : 
ইন্টারনেটে ওয়েব ডিজাইন, 
গ্রাফিঙ্ ডিজাইন, সার্চ ইঞ্জিন 
অপটিমাইজেশন (এসইও), এসএমএম 
(সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং), 
থিম ডিজাইন, প্রোগ্রামিং, ওয়েবসাইট ম্যানেজমেন্ট, লিঙ্ক 
বিল্ডিং, ডাটা এন্ট্রি, টাইপিং, 
আর্টিক্যাল বা ব্লগ রাইটিংসহ 
নানা ধরনের কাজ রয়েছে। অনেক 
ছোট ছোট কাজের জন্যও এসব সাইট 
ভালো টাকা দেয়। উদাহরণস্বরূপ ২০০ শব্দ টাইপ করিয়ে নিতে এক 
থেকে তিন ডলার পর্যন্ত দেয় 
বায়াররা। আউটসোর্সিংয়ে কাজের 
কোনো অভাব নেই। ছবি তুলে, কার্টুন 
এঁকে কিংবা যার যে বিষয়ে আগ্রহ 
সে বিষয় নিয়েও আয়ের পথ খুঁজে পাবেন আউটসোর্সিংয়ে। কারও 
যদি শুধু মুভি দেখার প্রতি আগ্রহ 
থাকে তিনি নির্ধারিত 
মুভি দেখে ২০০-৩০০ শব্দের 
একটি রিভিউ লিখে দিলেও পেমেন্ট 
পাবেন। ফেসবুক থেকেও আয় হয়! : 
অ্যালবাট্রস 
টেকনোলজি নামে একটি আইটি প্রতিষ্ঠানে কাজের 
পাশাপাশি ১৫ জনের দল গড়ে কয়েক 
মাস আগে থেকে আউটসোর্সিং শুরু 
করেছেন নাজমুল হাসান নাহিদ। বললেন, এসইও ও এসএমএম 
করে তিনি মাসে ৭০০ ডলার পর্যন্ত 
আয় করেছেন। এ ক্ষেত্রে মাসে পাঁচ 
হাজার ডলার পর্যন্ত আয় করা সম্ভব। 
এ ছাড়া প্রোগ্রামিং, ডিজাইনের 
মতো কাজে আরও বেশি আয় সম্ভব। দক্ষ জনবলের 
অভাবে দামি কাজগুলো আমরা তেমন 
করতে পারি না। তিনি বলেন, 
এসএমএম হলো সোশ্যাল 
মিডিয়া মার্কেটিং। ফেসবুক, 
টুইটার, লিঙ্কেদিন, স্কাইপির মতো সাইটগুলোয় বিভিন্ন বিষয় 
মার্কেটিং করা। ফেসবুকে লাইক 
দিয়েও আয় করা যায়। তিনি বলেন, 
আমাদের দেশে ২০ লাখের 
মতো ফেসবুক ব্যবহারকারী আছেন। 
অথচ ফেসবুকেও যে আয় সম্ভব তা তারা জানেন না। প্রশিক্ষণ 
নিয়ে প্রতিদিন চার-পাঁচ 
ঘণ্টা শ্রম দিয়ে এখান থেকেও 
মাসে ৫০০ ডলার আয় করা যায়। 
তবে কাজে নামার আগে দক্ষ 
হয়ে নামা উচিত। কারণ একবার সুনাম নষ্ট হলে তা পুরো খাতটির 
জন্য ক্ষতির কারণ হবে। এ জন্য 
সারা দেশে ভালো ভালো প্রশিক্ষণ 
কেন্দ্র স্থাপন জরুরি। কাজ পাওয়া যাবে : 
ইন্টারনেটে কিছু সাইট 
আছে যেখানে বায়াররা কাজ 
দিয়ে থাকে। এসব সাইটে গিয়ে বিট 
করে কাজ নেওয়া যায়। এগুলো হলো - www.freelancer.com , www.odesk.com , www.guru.com ,www.microworkers.com , www.fiverr.com ছাড়াও আরও অনেক সাইট আছে যেখানে এসব কাজ 
পাওয়া যাবে। টাকা পাওয়ার উপায় : লোকাল 
ব্যাংকে ওয়ার ট্রান্সফারের 
মাধ্যমে আউটসোর্সিংয়ে আয়ের 
টাকা আনা যায়। 
ফ্রি ল্যান্সিং সাইটগুলোয় আবেদন 
করে পাইওনিয়ার কার্ড করে টাকা আনা যায়। এ ছাড়া গত ২১ 
ফেব্রুয়ারি থেকে বাংলাদেশে 'অ্যালার্ট 
পে' যাত্রা শুরু করেছে। 
এখানে বিনামূল্যে অ্যাকাউন্ট 
করে টাকা আনা যায়। প্রতি ৫০০ 
ডলার তুলতে 'অ্যালার্ট পে'-কে ২৪০ টাকা দিতে হয়। 
ফ্রি ল্যান্সাররা বলছেন, কিছু 
সাইট 'অ্যালার্ট পে' সাপোর্ট 
করে না। তাই 'পে-পল' নামক 
প্রতিষ্ঠানটি দরকার। বেসিসের 
ফাহিম মাশরুর বলেন, এ ব্যাপারে বেসিস ও বাংলাদেশ 
ব্যাংক চেষ্টা করছে। দু-এক মাসের 
মধ্যে পে-পলের 
একটি প্রতিনিধি দল 
বাংলাদেশে আসবে। তারা এখন 
বাংলাদেশের আউটসোর্সিংয়ের সম্ভাবনা যাচাই করছে। পে-পল 
বাংলাদেশে কার্যক্রম শুরু 
করলে আউটসোর্সিংয়ে বাংলাদেশ 
আরও একধাপ 
এগিয়ে যাবে বলে মনে করেন তিনি। প্রশিক্ষণ নেওয়া যাবে : 
আউটসোর্সিংয়ের সম্ভাবনা বাড়ার 
সঙ্গে সঙ্গে অনেক 
আইটি প্রতিষ্ঠানই এখন অন্য সেবার 
পাশাপাশি আউটসোর্সিং প্রশিক্ষণ 
দেওয়া শুরু করেছে। এর মধ্যে NIHRD LIMITED, DEVSTEAM, 
DIIT, BD JOBS, BIDD ছাড়াও অন্তত 
অর্ধশতাধিক ছোট-বড় প্রতিষ্ঠান 
এখন আউটসোর্সিং বিষয়ে প্রশিক্ষণ 
দিচ্ছে। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান 
প্রশিক্ষণের পর শিক্ষার্থীদের কাজেরও ব্যবস্থা করে দিচ্ছে। পাঁচ 
থেকে ৪০ হাজার টাকায় এসব 
প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণ 
নেওয়া যায়। সতর্কতা : অনলাইনে ঘরে বসেই আয় 
করার এ সময়ে প্রশিক্ষণের 
নামে কিছু প্রতিষ্ঠান আগ্রহীদের 
প্রতারিত করছে। তাই জেনে- 
বুঝে প্রশিক্ষণ নিতে হবে। 
প্রশিক্ষণ নিতে আর্থিক লেনদেনের আগে প্রতিষ্ঠানের মান 
সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে।

No comments:

Post a Comment