Tuesday, April 14, 2015

(Possibiliy for young) সম্ভাবনার নতুন হাতছানি তরুনদের জন্য

প্রতিটি ঘর 
হবে একেকটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। 
ঘরে বসেই একজন মাসে আয় 
করতে পারবেন ১৫ হাজার 
থেকে কয়েক লাখ টাকা। 
উচ্চশিক্ষা নিয়ে একটা চাকরির জন্য ঘুরতে হবে না দ্বারে দ্বারে। 
এমন উজ্জ্বল সম্ভাবনার 
হাতছানি দিয়ে ডাকছে বিশ্ব 
আউটসোর্সিং মার্কেট। এখনই 
সারা বিশ্বে রয়েছে প্রায় এক 
হাজার ৪৭০ বিলিয়ন ডলারের কাজ। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা দাঁড়ায় এক 
লাখ ২২ হাজার বিলিয়ন টাকা। এর 
মধ্যে সফটওয়্যার রপ্তানিরও 
একটি বড় বাজার রয়েছে। 
প্রতিনিয়ত এ বাজার বড় হচ্ছে। 
বাংলাদেশ এ টাকার শতকরা এক ভাগেরও কম কাজ করে। ভারত 
করে ৪৩ ভাগ। অথচ শ্রমমূল্য কম 
হওয়ায় এ বিপুল পরিমাণ টাকার বড় 
অংশই ঘরে তোলার সুযোগ 
রয়েছে বাংলাদেশের। শুধু দরকার 
কার্যকর উদ্যোগ আর সচেতনতা। কাজ করার উপযোগী দক্ষ 
জনশক্তি গড়ে তুলতে পারলে ও 
ঘরে ঘরে ইন্টারনেট সেবা সহজলভ্য 
হলেই অতি অল্প সময়ে এ 
খাতটি গার্মেন্টস খাতকেও 
ছাড়িয়ে যাবে বলেই মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।বর্তমানে দেশের 
প্রায় ৩০ হাজার পেশাদার 
তথ্যপ্রযুক্তিবিদ বিশ্বের হাজারের 
বেশি প্রতিষ্ঠানের হয়ে ঘরে বসেই 
কাজ করছেন। এ ছাড়া লক্ষাধিক তরুণ 
বিভিন্ন পর্যায়ে আউটসোর্সিংয়ে জড়িত। এ 
সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। 
সারা বিশ্বে ব্যবসা-বাণিজ্য 
বাড়ার 
সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে আউটসোর্সিংয়ের 
কাজ। বিশ্বের বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের অনেক কাজই 
এখন বাইরের প্রতিষ্ঠান 
বা ব্যক্তি দিয়ে করিয়ে নেয়। এসব 
কাজ করানোর 
ক্ষেত্রে তারা দক্ষতার 
পাশাপাশি কম টাকায় কাজ করে এমন দেশকেই বেছে নেয়। 
প্রয়োজনীয় 
দক্ষতা থাকলে ইন্টারনেটের 
মার্কেট প্লেস 
(যেখানে কোম্পানিগুলো কাজ দেয়) 
থেকে কাজগুলো বিট করে নিতে পারে যে কেউ। 
বর্তমানে ফিলিপাইন, ভারত, 
পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, 
আফ্রিকা আউটসোর্সিংয়ের 
মাধ্যমে প্রচুর আয় করছে। 
ফিলিপাইনে গত আট বছরে প্রায় সাড়ে চার লাখ কর্মসংস্থান 
হয়েছে শুধু আউটসোর্সিংয়ের 
মাধ্যমে। বিপুল সম্ভাবনা : বাংলাদেশ 
ব্যক্তিগত 
পর্যায়ে আউটসোর্সিংয়ে বিশ্ববাজারে উজ্জ্বল 
অবস্থানে থাকলেও পেমেন্টের 
জটিলতার কারণে এ খাতের 
আয়কে মূলধারার রপ্তানি আয় হিসেবে গণ্য করা হয় না। এ 
জটিলতা কাটলে এ খাতের বিপুল 
পরিমাণ বৈদেশিক আয় দৃশ্যমান 
হবে। চলতি অর্থবছরে শুধু 
সফটওয়্যার রপ্তানি খাতেই 
লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১০ কোটি ডলার। সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, 
বাংলাদেশের জন্য আউটসোর্সিংই 
হচ্ছে এ সময়ের সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য 
টেকসই কর্মক্ষেত্র। ভারত ২০০৯ 
সালে এ খাতে পাঁচ হাজার 
কোটি ডলার আয় করেছে। একই বছর চীন আয় করেছে ১১ হাজার ৮০ 
কোটি ডলার। শুধু যুক্তরাষ্ট্রই 
বছরে প্রায় ৫০ হাজার 
কোটি ডলারের 
আউটসোর্সিং করাচ্ছে। বিশ্বের 
অন্যতম একটি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেট প্লেস 
'ওডেঙ্'-এ বাংলাদেশের বর্তমান 
অবস্থান তৃতীয়। বাংলাদেশ 
প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় ৪০ 
শতাংশ কম দামে আউটসোর্সিং করায় 
বিশ্ববাজারে দ্রুত জায়গা করে নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। 
ব্যক্তিপর্যায়ে উদ্যোগ থেকে মাত্র 
কয়েক বছরে আউটসোর্সিংয়ে একজন 
সফল ব্যবসায়ী আবুল কাশেম। 
দিয়েছেন এঙ্পোনেন্ট ইনফোসিস্টেম 
প্রা. লি. নামের একটি আউটসোর্সিং ফার্ম। গাড়ি- 
বাড়ি সবই করেছেন এখানকার আয় 
থেকে। তিনি জানান, মাত্র দু-এক 
মাসের ট্রেনিং নিয়ে ছোট ছোট 
কাজ করে অনায়াসেই 
ঘরে বসে মাসে ২০ থেকে ৫০ হাজার টাকা আয় করা যায়। কাজ 
শিখে গৃহিণীরাও ঘরে বসে এ 
টাকা আয় করতে পারেন। এ জন্য 
ইন্টারনেটের মার্কেট প্লেসগুলোয় 
কী ধরনের কাজ দেওয়া হয়, 
তা করতে কী যোগ্যতা লাগবে তা দেখে নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে। ইংরেজিতেও 
কিছুটা দক্ষতা প্রয়োজন। এ 
ছাড়া দলবদ্ধভাবে বড় কাজ বিট 
করে নিয়ে মাসে লাখ লাখ টাকাও 
আয় করা যায়। তবে কেউ 
যদি এটাকে পেশা হিসেবে নিতে চান তবে তাকে নিয়মিত কাজের ধরনের 
সঙ্গে নিজেকে আপডেট রাখতে হবে। 
বাংলাদেশ ইনফরমেশন অ্যান্ড 
সফটওয়ার সার্ভিসেস (বেসিস)-এর 
সহসভাপতি এ কে এম ফাহিম মাশরুর 
বলেন, পর্যাপ্ত দক্ষ জনবল গড়ে তুলতে পারলে এ খাতের আয় 
গার্মেন্টস খাতকেও 
ছাড়িয়ে যাবে। 
পাশাপাশি বেকারত্বও দূর হবে। এ 
ক্ষেত্রে সরকারি-বেসরকারি উভয় 
পর্যায়ে উদ্যোগ নেওয়া দরকার। তিনি বলেন, 
এখনো দেশে ইন্টারনেট মূল্য বেশি। 
এ ছাড়া গ্রামে এ 
সেবাটি এখনো সেভাবে পেঁৗছেনি। 
তাই দেশের বৃহৎ জনগোষ্ঠীই বাদ 
পড়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া বিদ্যুৎব্যবস্থারও উন্নয়ন 
দরকার। ইন্টারনেটে ধীরগতি : ইন্টারনেট 
ব্যবসায়ীদের সংগঠন ইসপাবের 
সভাপতি মো. আখতারুজ্জামান মঞ্জু 
বলেন, বিটিআরসি তিন হাজার 
টাকার ব্যান্ডউইথড ১০ হাজার 
টাকায় বিক্রি করছে। এ ছাড়া ব্যান্ডউইথের 
চেয়ে নেটওয়ার্ক স্থাপন ব্যয়বহুল। 
তাই দাম কমানো যাচ্ছে না। সরকার 
নেটওয়ার্ক স্থাপন 
করে দিতে পারলে সারা দেশে স্বল্পব্যয়ে ইন্টারনেট 
সেবা দেওয়া সম্ভব হতো। দেশের দুই কোটি ৮১ লাখ ইন্টারনেট 
ব্যবহারকারীর একটি উল্লেখযোগ্য 
অংশ এখনো সেলফোনে ইন্টারনেট 
ব্যবহার করে। অবকাঠামোগত 
সমস্যার কারণে ব্যান্ডউইথের 
ব্যবহার বাড়ানো যাচ্ছে না। অন্যদিকে ব্যান্ডউইথের দামও 
বেশি। এ জন্য 
স্বাচ্ছন্দ্যে আউটসোর্সিংয়ের কাজ 
করা যাচ্ছে না। 
বিটিআরসি চেয়ারম্যান মেজর 
জেনারেল (অব.) জিয়া আহমেদ বলেন, ইন্টারনেট ব্যান্ডউইডথের দাম 
ইতোমধ্যে দুবার কমানো হয়েছে। 
আরও কমবে। এদিকে দ্বিতীয় 
সাবমেরিন ক্যাবলের সঙ্গে সম্পৃক্ত 
হতে সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ 
পর্যায়ে। নতুন সংযোগটি স্থাপন হলেই ইন্টারনেটে গতি বাড়বে। যেসব কাজ করা যায় : 
ইন্টারনেটে ওয়েব ডিজাইন, 
গ্রাফিঙ্ ডিজাইন, সার্চ ইঞ্জিন 
অপটিমাইজেশন (এসইও), এসএমএম 
(সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং), 
থিম ডিজাইন, প্রোগ্রামিং, ওয়েবসাইট ম্যানেজমেন্ট, লিঙ্ক 
বিল্ডিং, ডাটা এন্ট্রি, টাইপিং, 
আর্টিক্যাল বা ব্লগ রাইটিংসহ 
নানা ধরনের কাজ রয়েছে। অনেক 
ছোট ছোট কাজের জন্যও এসব সাইট 
ভালো টাকা দেয়। উদাহরণস্বরূপ ২০০ শব্দ টাইপ করিয়ে নিতে এক 
থেকে তিন ডলার পর্যন্ত দেয় 
বায়াররা। আউটসোর্সিংয়ে কাজের 
কোনো অভাব নেই। ছবি তুলে, কার্টুন 
এঁকে কিংবা যার যে বিষয়ে আগ্রহ 
সে বিষয় নিয়েও আয়ের পথ খুঁজে পাবেন আউটসোর্সিংয়ে। কারও 
যদি শুধু মুভি দেখার প্রতি আগ্রহ 
থাকে তিনি নির্ধারিত 
মুভি দেখে ২০০-৩০০ শব্দের 
একটি রিভিউ লিখে দিলেও পেমেন্ট 
পাবেন। ফেসবুক থেকেও আয় হয়! : 
অ্যালবাট্রস 
টেকনোলজি নামে একটি আইটি প্রতিষ্ঠানে কাজের 
পাশাপাশি ১৫ জনের দল গড়ে কয়েক 
মাস আগে থেকে আউটসোর্সিং শুরু 
করেছেন নাজমুল হাসান নাহিদ। বললেন, এসইও ও এসএমএম 
করে তিনি মাসে ৭০০ ডলার পর্যন্ত 
আয় করেছেন। এ ক্ষেত্রে মাসে পাঁচ 
হাজার ডলার পর্যন্ত আয় করা সম্ভব। 
এ ছাড়া প্রোগ্রামিং, ডিজাইনের 
মতো কাজে আরও বেশি আয় সম্ভব। দক্ষ জনবলের 
অভাবে দামি কাজগুলো আমরা তেমন 
করতে পারি না। তিনি বলেন, 
এসএমএম হলো সোশ্যাল 
মিডিয়া মার্কেটিং। ফেসবুক, 
টুইটার, লিঙ্কেদিন, স্কাইপির মতো সাইটগুলোয় বিভিন্ন বিষয় 
মার্কেটিং করা। ফেসবুকে লাইক 
দিয়েও আয় করা যায়। তিনি বলেন, 
আমাদের দেশে ২০ লাখের 
মতো ফেসবুক ব্যবহারকারী আছেন। 
অথচ ফেসবুকেও যে আয় সম্ভব তা তারা জানেন না। প্রশিক্ষণ 
নিয়ে প্রতিদিন চার-পাঁচ 
ঘণ্টা শ্রম দিয়ে এখান থেকেও 
মাসে ৫০০ ডলার আয় করা যায়। 
তবে কাজে নামার আগে দক্ষ 
হয়ে নামা উচিত। কারণ একবার সুনাম নষ্ট হলে তা পুরো খাতটির 
জন্য ক্ষতির কারণ হবে। এ জন্য 
সারা দেশে ভালো ভালো প্রশিক্ষণ 
কেন্দ্র স্থাপন জরুরি। কাজ পাওয়া যাবে : 
ইন্টারনেটে কিছু সাইট 
আছে যেখানে বায়াররা কাজ 
দিয়ে থাকে। এসব সাইটে গিয়ে বিট 
করে কাজ নেওয়া যায়। এগুলো হলো - www.freelancer.com , www.odesk.com , www.guru.com ,www.microworkers.com , www.fiverr.com ছাড়াও আরও অনেক সাইট আছে যেখানে এসব কাজ 
পাওয়া যাবে। টাকা পাওয়ার উপায় : লোকাল 
ব্যাংকে ওয়ার ট্রান্সফারের 
মাধ্যমে আউটসোর্সিংয়ে আয়ের 
টাকা আনা যায়। 
ফ্রি ল্যান্সিং সাইটগুলোয় আবেদন 
করে পাইওনিয়ার কার্ড করে টাকা আনা যায়। এ ছাড়া গত ২১ 
ফেব্রুয়ারি থেকে বাংলাদেশে 'অ্যালার্ট 
পে' যাত্রা শুরু করেছে। 
এখানে বিনামূল্যে অ্যাকাউন্ট 
করে টাকা আনা যায়। প্রতি ৫০০ 
ডলার তুলতে 'অ্যালার্ট পে'-কে ২৪০ টাকা দিতে হয়। 
ফ্রি ল্যান্সাররা বলছেন, কিছু 
সাইট 'অ্যালার্ট পে' সাপোর্ট 
করে না। তাই 'পে-পল' নামক 
প্রতিষ্ঠানটি দরকার। বেসিসের 
ফাহিম মাশরুর বলেন, এ ব্যাপারে বেসিস ও বাংলাদেশ 
ব্যাংক চেষ্টা করছে। দু-এক মাসের 
মধ্যে পে-পলের 
একটি প্রতিনিধি দল 
বাংলাদেশে আসবে। তারা এখন 
বাংলাদেশের আউটসোর্সিংয়ের সম্ভাবনা যাচাই করছে। পে-পল 
বাংলাদেশে কার্যক্রম শুরু 
করলে আউটসোর্সিংয়ে বাংলাদেশ 
আরও একধাপ 
এগিয়ে যাবে বলে মনে করেন তিনি। প্রশিক্ষণ নেওয়া যাবে : 
আউটসোর্সিংয়ের সম্ভাবনা বাড়ার 
সঙ্গে সঙ্গে অনেক 
আইটি প্রতিষ্ঠানই এখন অন্য সেবার 
পাশাপাশি আউটসোর্সিং প্রশিক্ষণ 
দেওয়া শুরু করেছে। এর মধ্যে NIHRD LIMITED, DEVSTEAM, 
DIIT, BD JOBS, BIDD ছাড়াও অন্তত 
অর্ধশতাধিক ছোট-বড় প্রতিষ্ঠান 
এখন আউটসোর্সিং বিষয়ে প্রশিক্ষণ 
দিচ্ছে। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান 
প্রশিক্ষণের পর শিক্ষার্থীদের কাজেরও ব্যবস্থা করে দিচ্ছে। পাঁচ 
থেকে ৪০ হাজার টাকায় এসব 
প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণ 
নেওয়া যায়। সতর্কতা : অনলাইনে ঘরে বসেই আয় 
করার এ সময়ে প্রশিক্ষণের 
নামে কিছু প্রতিষ্ঠান আগ্রহীদের 
প্রতারিত করছে। তাই জেনে- 
বুঝে প্রশিক্ষণ নিতে হবে। 
প্রশিক্ষণ নিতে আর্থিক লেনদেনের আগে প্রতিষ্ঠানের মান 
সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে।

অমুসলিম মনিষী কর্তৃক মুহম্মদ (স) সমপর্কে কিছু উদবৃতি

মুহাম্মদ ( স: ) সম্পর্কে এখানে উল্লেখিত বিভিন্ন 
মনিষীর উদ্ধৃতিগুলো একটি ওয়েবসাইটে পেয়েছি। সেখান 
থেকে আপনাদের জন্য বাংলায় অনুবাদ করে দিলাম। 
অনুবাদে ভূল হওয়া স্বাভাবিক এবং তার জন্যে আগেই 
ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। উদ্ধৃতিগুলো কোন্ বই থেকে নেয়া 
হয়েছে তা উল্লেখ করা আছে। 
Sir George Bernard Shaw in 'The Genuine Islam,' 
Vol. 1, No. 8, 1936. মুহাম্মদের ধর্মের প্রতি আমি 
সবসময় সুউচ্চ ধারণা পোষণ করি কারণ এর চমৎকার 
প্রাণবন্ততা। আমার কাছে মনে হয় এটাই একমাত্র ধর্ম 
যেটা সদা পরিবর্তনশীল জীবনযাত্রার সাথে অঙ্গীভূত 
হওয়ার ক্ষমতা রাখে যা প্রত্যেক যুগেই মানুষের হৃদয়ে 
আবেদন রাখতে সক্ষম। আমি তাঁর(মুহাম্মদ) সম্বন্ধে 
পড়াশোনা করেছি-- চমৎকার একজন মানুষ এবং আমার 
মতে খ্রিস্টবিরোধী হওয়া সত্বেও তাঁকে অবশ্যই 
মানবতার ত্রাণকর্তা বলতে হবে। আমি বিশ্বাস করি 
তাঁর মতো ব্যক্তির নিকট যদি আধুনিক বিশ্বের 
একনায়কতন্ত্র অর্পণ করা হতো তবে এর সমস্যাগুলো 
তিনি এমনভাবে সফলতার সাথে সমাধান করতেন যা বহু 
প্রতিক্ষীত শান্তি ও সুখ আনয়ন করতো। আমি 
ভবিষ্যতবাণী করছি যে মুহাম্মদের ধর্মবিশ্বাস 
আগামীদিনের ইউরোপের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে, যা 
ইতিমধ্যে বর্তমান ইউরোপে গ্রহণযোগ্যতা পেতে 
আরম্ভ করেছে।Thomas Carlyle in 'Heroes and Hero 
Worship and the Heroic in History,' 1840 এ 
লোকটিকে (মুহাম্মদ) ঘিরে যে মিথ্যাগুলো (পশ্চিমা 
অপবাদ) পূন্জীভূত হয়ে আছে- যার ভালো অর্থ হতে 
পারে ধর্মান্ধতা, তা আমাদের নিজেদের জন্যই 
লজ্জাজনক। Mahatma Gandhi, statement 
published in 'Young India,'1924. আমি জীবনগুলোর 
মধ্যে সেরা একজনের জীবন সম্পর্কে জানতে 
চেয়েছিলাম যিনি আজ লক্ষ কোটি মানুষের হৃদয়ে 
অবিতর্কিতভাবে স্থান নিয়ে আছেন.......যেকোন 
সময়ের চেয়ে আমি বেশী নিশ্চিত যে ইসলাম তরবারির 
মাধ্যমে সেইসব দিনগুলোতে মানুষের জীবন-ধারণ 
পদ্ধতিতে স্থান করে নেয়নি। ইসলামের প্রসারের কারণ 
হিসেবে কাজ করেছে নবীর দৃঢ় সরলতা, নিজেকে মূল্যহীন 
প্রতিভাত করা, ভবিষ্যতের ব্যাপারে সতর্ক ভাবনা, 
বন্ধু ও অনুসারীদের জন্য নিজেকে চরমভাবে উৎসর্গ 
করা, তাঁর অটল সাহস, ভয়হীনতা, ঈশ্বর এবং তাঁর 
(নবীর) ওপর অর্পিত দায়িত্বে অসীম বিশ্বাস। এ সব-ই 
মুসলমানদেরকে সকল বাঁধা কাটিয়ে উঠতে সাহায্য 
করেছে। যখন আমি মুহাম্মদের জীবনীর ২য় খন্ড বন্ধ 
করলাম তখন আমি খুব দু:খিত ছিলাম যে এই মহান 
মানুষটি সম্পর্কে আমার পড়ার আর কিছু বাকি থাকলো 
না। Dr. William Draper in 'History of Intellectual 
Development of Europe' জাস্টিনিয়ানের মৃত্যুর চার 
বছর পর, ৫৬৯ খ্রিস্টাব্দে আরবে একজন মানুষ 
জন্মগ্রহণ করেন যিনি সকলের চাইতে মানবজাতির ওপর 
সবচেয়ে বেশি প্রভাব বিস্তার করেছিলেন....অনেক 
সাম্রাজ্যের ধর্মীয় প্রধান হওয়া, মানবজাতির এক 
তৃতীয়াংশের প্রাত্যহিক জীবনের পথনির্দেশক হিসেবে 
কাজ করা-- এসবকিছুই সৃষ্টিকর্তার দূত হিসেবে তাঁর 
উপাধির যথার্থতা প্রমাণ করে। Alphonse de 
LaMartaine in 'Historie de la Turquie,' Paris, 
1854. উদ্দেশ্যের মহত্ব, লক্ষ্য অর্জনের উপায়সমূহের 
ক্ষুদ্রতা এবং আশ্চর্যজনক ফলাফল যদি অসাধারণ 
মানুষের তিনটি বৈশিষ্ট্য হয় তবে কে মুহাম্মদের সাথে 
ইতিহাসের অন্য কোন মহামানবের তুলনা করতে সাহস 
করবে ? বেশীরভাগ বিখ্যাত ব্যক্তি শুধুমাত্র 
সেনাবাহিনী, আইন এবং সাম্রাজ্য তৈরী করেছেন। তাঁরা 
যদি কিছু প্রতিষ্ঠা করে থাকেন সেটা কিছুতেই জাগতিক 
ক্ষমতার চাইতে বেশি কিছু নয় যা প্রায়ই তাদের চোখের 
সামনে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এই মানুষটি শুধুমাত্র 
সেনাবাহিনী, আইন, সাম্রাজ্য, শাসক, লোকবল-ই 
পরিচালনা করেননি সেইসাথে তৎকালীন বিশ্বের লক্ষ- 
লক্ষ মানুষের জীবনকে আন্দোলিত করেছিলেন; সবচেয়ে 
বড় কথা হলো তিনি দেব-দেবী, ধর্মসমূহ, ধারণাগুলো, 
বিশ্বাসসমূহ এবং আত্মাগুলোকে আন্দোলিত 
করেছিলেন।দার্শনিক, বাগ্মী, বার্তাবাহক, আইনপ্রণেতা, 
নতুন ধারণার উদ্ভাবনকারী/ধারণাকে বাস্তবে 
রূপদানকারী, বাস্তব বিশ্বাসের পুনরুদ্ধারকারী.....বিশটি 
জাগতিক এবং একটি আধ্যাত্মিক সাম্রাজ্যের 
প্রতিষ্ঠাতা-এই হলো মুহাম্মদ। মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব 
পরিমাপের যত মাপকাঠি আছে তার ভিত্তিতে বিবেচনা 
করলে আমরা নিজেদেরকে প্রশ্ন করতে পারি- মুহাম্মদের 
চেয়ে শ্রেষ্ঠ কেউ আছে কি ? Michael H. Hart in 
'The 100, A Ranking of the Most Influential 
Persons In History,' New York, 1978. মুহাম্মদকে 
সর্বকালের সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের তালিকায় 
শীর্ষস্থান দেয়াটা অনেক পাঠককে আশ্চর্যান্বিত করতে 
পারে এবং অন্যদের মনে প্রশ্নের উদ্রেক হতে পারে, 
কিন্তু ইতিহাসে তিনিই একমাত্র ব্যক্তি যিনি সেকুলার 
এবং ধর্মীয় উভয় পর্যায়ে সর্বোচ্চ পরিমাণ সফল 
ছিলেন। সম্ভবত ইসলামের ওপর মুহাম্মদের তুলনামূলক 
প্রভাব খ্রিস্টান ধর্মের ওপর যীশু ও সেইন্ট পলের 
সম্মিলিত প্রভাবের চেয়ে বেশী।.... আমি মনে করি, 
ধর্মীয় ও সেকুলার উভয়ক্ষেত্রে প্রভাবের এই বিরল 
সমন্বয় যোগ্য ব্যাক্তি হিসেবেই মুহাম্মদকে 
মানবেতিহাসের সবচেয়ে প্রভাবশালী একক ব্যক্তিত্ব 
হিসেবে আবির্ভুত করেছে। W. Montgomery Watt in 
'Muhammad at Mecca,' Oxford, 1953. নিজ আদর্শ 
প্রতিষ্ঠার জন্য সকল প্রকার কষ্ট সহ্য করা, তাঁকে 
যারা বিশ্বাস করতো এবং নেতা হিসেবে অনুসরণ করতো 
তাদের সুউচ্চ চারিত্রিক গুণাবলি, এবং মুহাম্মদের 
অর্জনের বিশালত্ব- এ সবকিছুই তাঁর সততার সাক্ষ্য 
দেয়। মনে করুন মুহাম্মদ একজন অসাধু ব্যাক্তি যিনি 
সমাধানের চেয়ে সমস্যাই বেশী সৃষ্টি করেছেন। অধিকন্তু, 
আর কোন ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্বই মুহাম্মদের মতো 
পাশ্চাত্যে এতবেশী অবমূল্যায়িত হয়নি......শুধুমাত্র যা 
বর্ণিত হয়েছে তার ভিত্তিতে নয়, আমরা যদি মুহাম্মদকে 
সামান্য পরিমাণও বুঝতে চাই তবে অবশ্যই প্রয়োজনীয় 
সততা ও ন্যায়পরায়ণতা সহকারে তাঁকে বিচার করতে 
হবে। আমরা যদি আমাদের অতীত থেকে 
উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত ভূলগুলো সংশোধন করতে 
চাই তবে এটা ভূলে গেলে চলবে না যে চুড়ান্ত প্রমাণ 
আপাতদৃষ্টিতে যা সত্য বলে প্রতীয়মান হয় তারচেয়ে 
অনেক কঠিন শর্ত। এবং এই ব্যাপারে প্রমাণ অর্জন 
সত্যিই দু:সাধ্য হবে। D. G. Hogarth in 'Arabia' 
গুরুত্বপূর্ণ অথবা তুচ্ছ, তাঁর দৈনন্দিন প্রতিটি আচার- 
আচরণ একটি অনুশাসনের সৃষ্টি করেছে যা লক্ষ-কোটি 
মানুষ বর্তমানকালেও সচেতনতার সাথে মেনে চলে। 
মানবজাতির কোন অংশ কতৃক আদর্শ বলে বিবেচিত 
আর কোন মানুষকেই মুহাম্মদের মতো এতো 
পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে অনুসরণ করা হয়নি। খ্রিস্টধর্মের 
প্রতিষ্ঠাতার আচার-আচরণ তাঁর অনুসারীদের জীবন- 
যাপনকে নিয়ন্ত্রণ করেনি। অধিকন্তু, কোন ধর্মের 
প্রতিষ্ঠাতাই মুসলমানদের নবীর মতো এরকম অনুপম 
বৈশিষ্ট্য রেখে যায়নি। Gibbon in 'The Decline and 
Fall of the Roman Empire' 1823 মুহাম্মদের মহত্বের 
ধারণা আড়ম্বড়পূর্ণ রাজকীয়তার ধারণাকে অস্বীকার 
করেছে। স্রষ্টার বার্তাবাহক পারিবারিক গৃহকর্মে 
নিবেদিত ছিলেন; তিনি আগুন জ্বালাতেন; ঘর ঝাড়ু 
দিতেন; ভেড়ার দুধ দোয়াতেন; এবং নিজ হাতে নিজের 
জুতা ও পোষাক মেরামত করতেন। পাপের প্রায়শ্চিত্তের 
ধারণা ও বৈরাগ্যবাদকে তিনি অস্বীকার করেছেন। তাঁকে 
কখনো অযথা দম্ভ প্রকাশ করতে দেখা যায়নি, একজন 
আরবের সাধারণ খাদ্যই ছিলো তাঁর আহার্য। Lane- 
Poole in 'Speeches and Table Talk of the Prophet 
Muhammad' তিনি যাদেরকে আশ্রয় দিতেন তাদের 
জন্য ছিলেন সবচেয়ে বিশ্বস্ত রক্ষাকারী, কথাবার্তায় 
ছিলেন অত্যন্ত মিষ্টভাষী ও নম্র। তাঁকে যারা দেখত 
তারা শ্রদ্ধায় পূর্ণ হতো; যারাই তাঁর কাছে এসেছিল 
তাঁকে ভালবেসেছিল; যারা তাঁর সম্বন্ধে বর্ণনা দিত 
তারা বলতো, " তাঁর মতো মানুষ আগে বা পরে আমি 
কখনো দেখিনি।" তিনি ছিলেন অতি স্বল্পভাষী, কিন্তু 
যখন তিনি কথা বলতেন জোরের সাথে এবং 
সুচিন্তিতভাবে কথা বলতেন। এবং তিনি যা বলতেন তা 
কেউ ভুলতে পারতো না। Edward Gibbon and Simon 
Oakley in ‘History of the Saracen Empire,’ London, 
1870 প্রচার নয় মুহাম্মদের ধর্মের স্থায়িত্বই 
আমাদেরকে আশ্চর্যান্বিত করে। অকৃত্রিম এবং পূর্ণাংগ 
সম্মোহনকারী শক্তি যেটা তিনি মক্কা এবং মদীনায় 
অর্জন করেছিলেন সেটা বারশত বছর পরেও একই আছে 
কোরআনের মাধ্যমে ধর্মান্তরিত তাঁর ভারতীয়, 
আফ্রিকান ও তুর্কী অনুসারীদের মধ্যে। প্রলুব্ধ/ 
আক্রান্ত হওয়া সত্বেও মুসলমানরা তাদের মূল বিশ্বাস 
ক্ষয়প্রাপ্ত হতে দেয়নি। " আল্লাহ ছাড়া কোন উপাস্য 
নেই এবং মুহাম্মদ আল্লাহর দূত "-এটাই হলো ইসলামের 
সহজ এবং অপরিবর্তনীয় বিশ্বাস। বুদ্ধিবৃত্তিক ঈশ্বরের 
চেতনা কোন দৃশ্যমান মূর্তি দ্বারা হ্রাস পায়নি; নবীর 
মর্যাদা কখনো মানবীয় গুণাবলীর ব্যাপ্তি অতিক্রম 
করেনি। তাঁর জীবনধারণ পদ্ধতি শিষ্যদের 
কৃতজ্ঞতাবোধ ধরে রেখেছে যুক্তি ও ধর্মের সীমার 
মধ্যে। Jules Masserman in 'Who Were Histories 
Great Leaders?' in TIME Magazine, July 15, 1974 
নেতাদের অবশ্যই তিনধরনের কাজ সম্পাদন করতে হয়- 
অনুসারীদের মংগলের ব্যবস্থা করা, এমন একটি 
সামাজিক প্রতিষ্ঠানের সৃষ্টি করা যেটাতে সাধারণ 
লোকজন তুলনামূলকভাবে নিরাপত্তা বোধ করে, এবং 
অনুসারীদের জন্য একটি পূর্ণাংগ বিশ্বাসের যোগান 
দেয়া। প্রথমটি বিবেচনায় নেতা হলেন লুই পাস্তুর এবং 
সাল্ক( Salk)। দ্বিতীয় এবং তৃতীয় বৈশিষ্ট্য বিবেচনায় 
একদিকে গান্ধী ও কনফুসিয়াস এবং অন্যদিকে 
আলেকজান্ডার, সীজার ও হিটলার- এরা হলেন নেতা। 
যীশুখ্রিস্ট ও গৌতম বুদ্ধ তৃতীয়টি বিবেচনায় নেতা। 
সম্ভবত মুহাম্মদ হলেন সর্বকালের শ্রেষ্ঠ নেতা যিনি 
ওপরোক্ত তিনটি কার্যাবলীই সম্পাদন করেছেন। স্বল্প 
পরিসরে হলেও মুসাও একই কাজ করেছিলেন।Annie 
Besant in 'The Life and Teachings of Mohammad,' 
Madras, 1932. যে কেউ আরবের মহান নবীর জীবন 
এবং চরিত্র অধ্যয়ন করেন তার হৃদয়ে মহান নবীর প্রতি 
শ্রদ্ধার উদ্রেক না হয়ে পারে না, যিনি জেনেছেন তিনি 
(নবী) কিভাবে শিক্ষা দিতেন এবং বসবাস করতেন; তিনি 
ছিলেন স্রষ্টার মহান বার্তাবাহকদের অন্যতম। যদিও 
আমি আপনাদেরকে এখন যা বলবো তা অনেকের কাছে 
সুপরিচিত মনে হতে পারে, তথাপি যখনই আমি মুহাম্মদের 
জীবনী পুনরায় পাঠ করি প্রতিবারই আরবের মহান 
শিক্ষকের প্রতি আমার মনে মুগ্ধতা ও শ্রদ্ধার নতুন 
ভাব জাগ্রত হয়। W.C. Taylor in 'The History of 
Muhammadanism and its Sects' দরিদ্র লোকদের 
প্রতি তাঁর সদয়তা এত বেশী ছিল যে প্রায়ই পরিবার- 
পরিজনকে উপবাস করতে হতো। তিনি শুধু তাদের অভাব 
মোচন করেই তৃপ্ত হতেন না, তাদের সাথে কথা-বার্তা 
বলতেন এবং তাদের দু:খ-দুর্দশার জন্য গভীর সহানুভূতি 
প্রকাশ করতেন। তিনি ছিলেন ঘনিষ্ট বন্ধু এবং বিশ্বস্ত 
সহযোগী। Reverend Bosworth Smith in 
'Muhammad and Muhammadanism,' London, 
1874. রাষ্ট্রপ্রধান একইসাথে উপাসনাগৃহের প্রধান, 
তিনি ছিলেন একই সাথে সীজার এবং পোপ; তিনি পোপ 
ছিলেন কিন্তু পোপের দুরহংকার ছাড়া, তিনি সীজার 
ছিলেন কিন্তু সীজারের মতো বিরাট সেনাবাহিনী ছাড়া, 
দেহরক্ষী ছাড়া, শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী ছাড়া, স্থায়ী 
কোন ভাতা ছাড়া। যদি আজ পর্যন্ত কোন মানুষ 
ন্যায়বিচারপূর্ণ স্বর্গীয় শাসন করে থাকে, তবে সেটা 
ছিলেন মুহাম্মদ। Dr. Gustav Weil in 'History of the 
Islamic Peoples' মুহাম্মদ ছিলেন তাঁর অনুসারীদের 
জন্য জাজ্বল্যমান দৃষ্টান্ত। তাঁর চরিত্র ছিল নিষ্কলুষ 
এবং দৃঢ়। তাঁর গৃহ, পোষাক, খাদ্য- সবই ছিল অতি 
সাধারণ। তিনি এতই নিরহংকার ছিলেন যে তাঁর সংগীদের 
কাছ থেকে বিশেষ কোন সম্মান গ্রহণ করতেন না কিংবা 
যে কাজ তিনি নিজে করতে পারতেন তাঁর জন্য অযথা 
ভৃত্যের সাহায্য নিতেন না। সবসময় সবার জন্য তাঁর 
দ্বার ছিল উন্মুক্ত ছিল। তিনি অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখতে 
যেতেন এবং সবার প্রতি তাঁর অপরিসীম সহানুভূতি ছিল। 
তাঁর বদান্যতা ও মহানুভবতা ছিলো অসীম, সেইসাথে 
তিনি সবসময় অনুসরীদের মংগলের কথা চিন্তা করতেন। 
J.W.H. Stab in 'Islam and its Founder' তাঁর কাজের 
সীমা এবং স্থায়িত্ব বিবেচনা করলে শুধু মক্কার নবী 
হিসেবে নয় পৃথিবীর ইতিহাসে তিনি আরও দীপ্তিময়ভাবে 
জ্বলজ্বল করছেন। .....মানুষের বিখ্যাত হওয়ার 
মাপকাঠি অনুসারে বিচার করলে তাঁর সাথে অন্য কোন 
মরণশীলের খ্যাতি তুলনীয় হতে পারে কি ? Washington 
Irving in 'Life of Muhammad,' New York,1920. 
মুহাম্মদের সামরিক বিজয় তাঁর মাঝে কোন গর্ব ও অযথা 
দম্ভ জাগায়নি। প্রতিকূল দিনগুলোতে তাঁর আচার- 
ব্যবহার ও পোষাক-আশাক যেরকম সাধারণ ছিলো 
সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী হওয়ার পরও তা তিনি 
বজায় রেখেছিলে। রাজকীয় জাঁকজমক দূরে থাক, এমনকি 
কক্ষে ঢোকার পর তাঁর প্রতি কেউ বিশেষভাবে সম্মান 
প্রদর্শন করলে তিনি রেগে যেতেন। তিনি ছিলেন 
সাধারণ মানুষের ভালোবাসার পাত্র কারণ সবাইকেই 
তিনি আতিথেয়তার সাথে গ্রহণ করতেন এবং মনোযোগ 
সহকারে তাদের অভিযোগ শুনতেন। ব্যক্তিগত লেন- 
দেনের ক্ষেত্রে ছিলেন ন্যায়পরায়ণ । বন্ধু-আগন্তুক, 
ধনী-দরিদ্র, সবল-দুর্বল সবার সাথে সমতার সাথে 
ব্যবহার করতেন। Arthur Glyn Leonard in 'Islam, Her 
Moral and Spiritual Values' এটা ছিলো মুহাম্মদের 
মেধা, যে উদ্দীপনা তিনি ইসলামের মাধ্যমে আরবদের 
মাঝে সঞ্চারিত করেছিলেন তা তাদেরকে সুউচ্চ স্থানে 
আসন দিয়েছিল। যা তাদেরকে জড়তা ও গোত্রীয় 
সংকীর্ণতা থেকে মুক্ত করে জাতীয় ঐক্যের সুমহান 
নিদর্শন গড়তে এবং সাম্রাজ্য গড়তে সাহায্য করেছিল। 
সেটা ছিলো মুহাম্মদের সমীহ উদ্রেককারী একত্ববাদ, 
সরলতা, মিতাচার এবং অকৃত্রিমতা যা আদর্শের প্রতি 
প্রতিষ্ঠাতার বিশ্বস্ততাকেই বারবার স্মরণ করিয়ে দেয়, 
যা তাদের নৈতিকতা এবং বুদ্ধিবৃত্তিক চেতনাকে 
সর্বোচ্চ পর্যায়ে শাণিত করেছিল। James Michener in 
‘Islam: The Misunderstood Religion,’ Reader’s 
Digest, May 1955, pp. 68-70. ইতিহাসে আর কোন 
ধর্মই ইসলামের মতো এত দ্রুত বিস্তার লাভ করেনি। 
পাশ্চাত্যে এ বিশ্বাস অত্যন্ত দৃঢ়মূল যে ইসলামের এই 
প্রসার তরবারীর জোরেই সম্ভব হয়েছে। কিন্তু আধুনিক 
কোন বিজ্ঞজনই এ ধারণাকে গ্রহণ করেননি, এবং 
কোরআনেও বিবেকের/চিন্তার স্বাধীনতার ওপর জোর 
দেয়া হয়েছে।মুহাম্মদ, যে অনুপ্রাণিত মানুষটি ইসলাম 
প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, ৫৭০ খ্রিস্টাব্দে আরবের একটি 
গোত্রে জন্মগ্রহণ করেন যারা ছিল মূর্তিপূজক। জন্মের 
সময়ই এতিম হয়েছিলেন, তিনি সবসময় অসহায়, দরিদ্র, 
বিধবা, এতিম, দাস ও নিপীড়িত যারা তাদের জন্য 
উৎকন্ঠিত থাকতেন। বিশ বছর বয়সেই তিনি একজন 
সফল ব্যবসায়ী ছিলেন, এবং শিগগিরই বিধবা একজন 
মহিলার বাণিজ্য কাফেলার পরিচালক হন। যখন তিনি ২৫ 
বছর বয়সে উপনীত হন তাঁর নিয়োগকত্রী তাঁর প্রতিভায় 
মুগ্ধ হয়ে বিবাহের প্রস্তাব দেন। যদিও তিনি পঁচিশ 
বছরের বড় ছিলেন, তবু মুহাম্মদ তাঁকে বিবাহ করেন এবং 
যতদিন পর্যন্ত তিনি(খাদিজা) বেঁচে ছিলেন তাঁর প্রতি 
নিবেদিত ছিলেন।তাঁর পূর্ববর্তী বেশিরভাগ নবীদের মতই 
মুহাম্মদ তাঁর সীমাবদ্ধতা/অক্ষমতা বিবেচনা করে 
স্রষ্টার বার্তাবাহক হিসেবে দায়িত্ব পালনে অপরাগতা 
প্রকাশ করেন। কিন্তু স্বর্গীয় দূত আদেশ করলেন "পড়" 
। আমরা যতটুকু জানি মুহাম্মদ লিখতে কিংবা পড়তে 
জানতেন না, কিন্তু তিনি সেই উদ্দীপনাময় শব্দগুলো 
উচ্চারণ করতে শুরু করেন যা অচিরেই পৃথিবীর একটা 
বৃহৎ অংশে আমূল পরিবর্তন সাধন করবে : " আল্লাহ 
ছাড়া কোন উপাস্য নেই" ।মুহাম্মদের নিজের মৃত্যুর পর 
তাঁর ওপর দেবত্ব আরোপের একটি চেষ্টা চলেছিল, 
কিন্তু যিনি তাঁর পরে প্রশাসনিক উত্তরসূরী হওয়ার কথা 
ছিল তিনি এই অপধারণাকে সমূলে ধ্বংস করে দেন 
ধর্মের ইতিহাসের অন্যতম শ্রেষ্ঠ একটি বক্তৃতার 
মাধ্যমে : " যদি তোমাদের মধ্যে এমন কেউ থেকে থাকে 
যে মুহাম্মদের পূজা করতো, তবে সে জেনে রাখুক মুহাম্মদ 
মারা গেছেন। কিন্তু যারা আল্লাহর উপাসনা করতো 
তাদের জানা উচিত, তিনি চিরন্জীব " । তথ্যসূত্র: 
http://www.themodernreligion.com/ 
prophet_main.htm 
http://www.themodernreligion 
সং গ্রহ আবু মঅনসুর